সাতক্ষীরার পতিত জমিতে পানিফলের বাম্পার ফলন: বিঘাপ্রতি ৭০ হাজার টাকা লাভ

0
37

চিংড়ি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত উপকূলীয় জেলা সাতক্ষীরার কৃষকরা সম্প্রতি ফল চাষের দিকে ঝুঁকছেন। বিশেষ করে, স্বল্প সময়ে অধিক লাভজনক হওয়ায় এই জেলায় পানিফলের চাষ ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। পতিত ও জলাবদ্ধ জমিতেও এই ফল চাষ করা যায় বলে কৃষকরা বিঘাপ্রতি প্রায় ৭০ হাজার টাকা পর্যন্ত লাভ পাচ্ছেন।

বাজারের ব্যাপক চাহিদা থাকায় সাতক্ষীরা সদর, তালা, কলারোয়া ও দেবহাটা উপজেলায় পানিফলের চাষাবাদ চলছে। চাষাবাদে খরচ তুলনামূলকভাবে কম হলেও অল্প সময়ে ভালো মুনাফা পাওয়ায় চাষিরা এই ফলের দিকে আগ্রহী হচ্ছেন।

কলারোয়ার পানিফল চাষি মো. ইয়াকুব্বর আলী জানান, “সাড়ে তিন বিঘা জমি লিজ নিয়ে তিন বছর ধরে এই ফল চাষ করছি। যা খরচ হয় তার থেকে দ্বিগুণ লাভ হয়। এ বছর প্রায় এক লাখ টাকা খরচ করে এক লাখ টাকা লাভ থাকবে বলে আশা করছি।” তবে তিনি ইঁদুরের উপদ্রবে ফলের কিছুটা ক্ষতি হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন।

অন্য চাষিরা জানান, চারা গজানোর প্রায় তিন মাস পর থেকে পানিফলের ফলন শুরু হয় এবং এরপর আরও তিন মাস ধরে এই ফলন পাওয়া যায়। মোট ছয় মাসের এই সময়ে বিঘা প্রতি ১০-১৫ হাজার টাকা খরচ করে ৭০-৮০ হাজার টাকার ফল বিক্রি করা সম্ভব। এতে চাষিরা লাভবান হওয়ার পাশাপাশি দৈনিক ৬ ঘণ্টা কাজ করে শ্রমিকরাও সাড়ে ৩৫০ টাকা উপার্জন করতে পারছেন।

পুষ্টিগুণে ভরপুর এই ফল ডায়াবেটিসসহ নানা রোগের প্রতিষেধক হিসেবে কাজ করে বলে চিকিৎসকরা মনে করেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, সাতক্ষীরায় গত বছর ১৩৬ হেক্টর জমিতে পানিফলের চাষ হয়েছিল, যা চলতি বছর ২৮ হেক্টর বেড়ে ১৬৪ হেক্টরে পৌঁছেছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে ১৪২ হেক্টরে চাষ হয়েছিল।

সাতক্ষীরা জেলা কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ সাইফুল ইসলাম এই প্রসঙ্গে বলেন, “গত বছরের তুলনায় চলতি বছর পানিফল চাষের পরিমাণ বেড়েছে। পানিফল পুষ্টিগুণে সমৃদ্ধ একটি ফল, যা মানবদেহে ডায়াবেটিসসহ নানা রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। পানি ফলের চাষ আরও বাড়ানোর জন্য স্বল্প সুদে ঋণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।”