আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল (আইসিটি) সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করে আদালত অবমাননার অভিযোগের ব্যাখ্যা দিতে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ফজলুর রহমানকে সশরীরে হাজির থাকার নির্দেশ দিয়েছেন ট্রাইব্যুনাল। একই সঙ্গে আগামী ৮ ডিসেম্বর এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে।
রোববার (৩০ নভেম্বর) দুপুরে ট্রাইব্যুনাল-১ এর চেয়ারম্যান বিচারপতি মো. গোলাম মর্তূজা মজুমদার ও সদস্য অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মোহিতুল হক এনাম চৌধুরীর সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের প্যানেল এই আদেশ দেন।
ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউশনের পক্ষে শুনানি করেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম এবং গাজী এমএইচ তামিম।
২৬ নভেম্বর প্রসিকিউশন আদালত অবমাননার অভিযোগ উত্থাপন করে। এর আগে ২৩ নভেম্বর বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল টোয়েন্টিফোরের ‘মুক্তবাক: রাজনীতির তর্ক-বিতর্ক’ টকশোতে অংশ নিয়ে আইসিটি সম্পর্কে বিতর্কিত মন্তব্য করেন ফজলুর রহমান। ওই অনুষ্ঠানের ৪৯ মিনিটের ভিডিও ইতোমধ্যে ট্রাইব্যুনালে জমা দেওয়া হয়েছে এবং কিছু অংশ আদালতে বাজানোও হয়।
ভিডিওতে ফজলুর রহমানকে বলতে শোনা যায়, তিনি ‘এই কোর্ট মানেন না, এই কোর্টের বিচার মানেন না’ এবং ‘এই ট্রাইব্যুনালে শেখ হাসিনার বিচার হতে পারে না’—সহ আরও বিভিন্ন মন্তব্য করেন। এমনকি প্রসিকিউশনকে ‘শিবির সমর্থিত’ বলেও দাবি করেন তিনি।
প্রসিকিউটর গাজী এমএইচ তামিম আদালতকে জানান, ট্রাইব্যুনাল আইন সম্পর্কে অনুধাবনের ঘাটতি থেকেই এসব মন্তব্য করেছেন ফজলুর রহমান। তিনি বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা ও আগামী জাতীয় নির্বাচনে সম্ভাব্য এমপি প্রার্থী বলেও জানানো হয়। প্রসিকিউশন আরও জানায়, জুলাই বিপ্লব নিয়ে মন্তব্য করায় তিনি একসময় দল থেকেও সাময়িকভাবে বরখাস্ত হয়েছিলেন।
ট্রাইব্যুনাল উল্লেখ করে, আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল আইন ১৯৭৩ সালে প্রণীত। এ আইনের অধীনে ১৯৭৩ সালের আগে ও পরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার করা যায়। প্রসিকিউশনও এ ট্রাইব্যুনালের অবিচ্ছেদ্য অংশ।
ভিডিও ফুটেজ পর্যালোচনায় মন্তব্যগুলোকে ‘গুরুতর’ বলে উল্লেখ করেন ট্রাইব্যুনাল।
পরবর্তীতে আদালত ফজলুর রহমানের ব্যাখ্যা শুনতে আগামী ৮ ডিসেম্বর তাকে সশরীরে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়।